রহমত নিউজ 20 March, 2025 05:28 PM
চট্টগ্রাম আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দ্বীনী ও অধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে ইবতিদায়ী শিক্ষাকে সুচারুরূপে গঠন ও পরিচালিত করার লক্ষ্য গঠন করা হয়েছে স্বতন্ত্র শিক্ষা বোর্ড “নূরানী শিক্ষা বোর্ড পটিয়া”।
বৃহস্পতিবার (২০মার্চ) সকালে পটিয়া মাদরাসার মুহতামিম ও নতুন বোর্ডের সভাপতি মুফতী আবু তাহের কাসেমী নদভীর সভাপতিত্বে জামিয়ার দারুল হাদীস মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামিয়ার সদরে মুহতামিম শায়খুল হাদীস মুফতী হাফেজ আহমদুল্লাহ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস শায়খে সানি মুফতী শামসুদ্দিন জিয়া।
বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা ইরফান কাসেমীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মুফতী আবু তাহের নদভী কাসেমী বলেন, বাংলাদেশে নূরানী পদ্ধতি কোরআন শিক্ষায় এক অনন্য বিপ্লব সাধন করেছে। আমরাও এই বিপ্লবে শরীক হতে চাই। এ জন্য এই বোর্ড গঠন। এ দেশে বিভিন্ন বোর্ড শিক্ষা বিস্তারে কাজ করছে। আমরা পরস্পর সহযোগী হবো। আমরা কারো ’ফরিক’ নয়, সকলের ’রফীক’ হয়ে কাজ করবো। আমরা কারো প্রতিপক্ষ নয়, বরং সকলের সহযোগী হবো, ইনশা আল্লাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামিয়ার শায়খুল হাদিস মুফতী হাফেজ আহমদুল্লাহ বলেন, পবিত্র কুরআনের বিশুদ্ধতা ও সবলিলতার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে এ নূরানী পদ্ধতিতে। ছাত্ররা যেন দুই-তিন বছরের মধ্যে পবিত্র কোরআন বিশুদ্ধভাবে সুমুধুর কণ্ঠে তেলাওয়াত করার যোগ্য হয়ে উঠে এ বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুফতী শামসুদ্দিন জিয়া বলেন, সরকারিভাবে (পিটিআই, বিএড) ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। আমাদের জামিয়া পটিয়ায় বেসরকারিভাবে ইতিপূর্বে এ ধরণের প্রশিক্ষণ চালু ছিলো। কোন কারণে কিছুদিন সেগুলি বন্ধ ছিলো। আশা করি, স্থায়ী নূরানী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ যেমন চালু হয়েছে, ঠিক তেমনি উপরের স্তরগুলির প্রশিক্ষণও চালু করা যেতে পারে। এর জন্য আমাদের জামিয়া পটিয়া তত্ত্বাবধানে পরিচালিত কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ‘আঞ্জুমানে ইত্তিহাদুল মাদারিস বাংলাদেশ’ সুন্দর একটি উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।
তিনি পাঠ্যক্রম সম্পাদনের প্রতি গুরুত্বারূপ করে বলেন, অভিজ্ঞ ও দক্ষ লোকের মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করতে হবে। অতঃপর মাঠ পর্যায়ে এর কার্যকরিতা যাচায় করে পুঃমুদ্রণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে জামিয়ার মুহাদ্দিস ও বোর্ডের সহ-সভাপতি মাওলানা কাজী আখতার হোসেন নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। এতে
মুফতী হাফেজ আহমদুল্লাহ,মুফতী শামসুদ্দিন জিয়া, মুফতী একরাম হোসাইন ওদুদী, মুফতী জসীমুদ্দিন কাসেমী ও মাওলানা আব্দুল জলীল কওকবকে উপদেষ্টা করা হয়েছে।
নয় সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরি পরিষদে জামিয়া প্রধান মুফতী আবু তাহের কাসেমী নদভীকে সভাপতি, জামিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা হাফেয যাকারিয়া আযহারী ও মাওলানা কাজী আখতার হোসেন আনওয়ারীকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে।
মাওলানা ইরফান কাসেমীকে সাধারণ সম্পাদক, মুফতী মানযুর সিদ্দিককে সাংগঠনিক সম্পাদক, মাওলানা হাফেজ ফোরকানকে অর্থ সম্পাদক, মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ মাসুমকে প্রশিক্ষণ সম্পাদক,মাওলানা সলিমুদ্দিন মাহদি কাসেমীকে পাঠ্যক্রম সম্পাদনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ও মাওলানা মুহাম্মদ নুরুল আবছারকে শিক্ষা গবেষণা সম্পাদক করা হয়েছে।
মাওলানা ইরফান কাসেমী,মাওলানা হাবীবুল্লাহ,মুফতী মানযুর সিদ্দিক,মাওলানা সলিমুদ্দিন মাহদি কাসেমী ও মাওলানা এহসানুল হক আল-আযহারীকে সদস্য করে সিলেবাস প্রণয়ন ও বই-পুস্তুক সম্পাদনা ও প্রকশনার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি সম্পাদনা পরিষদ গঠন করা হয়।
এ ছাড়াও মাওলানা নুরুল আবছারকে আহবায়ক ও মাওলানা হাফেজ মাসুম ও প্রফেসর আবুল হোসেনকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি অডিট কমিটি গঠন করা হয়।
পরিশেষে জামিয়ার শায়খুল হাদিস মুফতী হাফেজ আহমদুল্লাহ -এর দুআ ও মুনাজাতের মাধ্যমে উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান সমাপ্ত করা হয়।